তোমার মুখের পানে চেয়ে দেখেছিলাম, তুমি অন্তহীন নির্বাক চোখে তাকিয়ে আছো নীলিমার দিকে | তোমার জগত জুড়ানো মুখের হাসি, মুছে গেছে না বলা কষ্টের সাথে | মা গো, তোমার বর্ণমালার বই আজ পাই না খুঁজে হাজার সাহিত্যের ভিড়ে | মা গো, তোমার প্রাণ জুড়ানো পল্লী গানের সুর, আর আসেনা ভেসে নদীর জলের স্রোতে |
সেই ভোর মনে পড়ে মা, মিছিলের প্লাবনে ভেসেছিলাম শুধু তোমার সুর কে বাঁচাবো বলে | মনে পড়ে, সেই সে ৮ই ফাল্গুন মা গো, শুধু তোমাকে, শুধু তোমাকে একটি বর্ণমালা এনে দেব বলে, আমরা, তোমার লাখো সন্তানেরা পাগলের মত ছুটেছিলাম, এসেম্বলির দিকে | শুধু তোমাকে একটি কবিতা লেখার খাতা এনে দেব বলে আমরা রক্তের কালিতে ভিজিয়েছিলাম তোমার আঁচল |
আমরা এনেছিলাম মা গো, আমরা এনেছিলাম তোমাকে মা বলে ডাকবার পূর্ণ অধিকার, আদায় করে |
তবে আজ কেন তোর এই নির্বাক চোখ মা গো? কেন আজ তোর চোখের তারে জলেনা মানিক আর? কেন আজ তোর চোখের প্রতিটি ফোটা জলের কনায় শুধু ভাষাহীন হাহাকার? আজ কেন খুঁজে পাই না সেই কবিতা লেখার খাতা? সন্তানের আগল রাখতে কি পারিসনি ধরে মা ? আজ তোর কোলের শাড়ি কেন ভিজে যায় অন্য ভাষার স্রোতে?
আজ তোর নির্মল ললাটে বাংলাকে ওরা একে দেয় কলঙ্কিত তিলকের মত, আজ তোর বুকের জমিনে বর্ণমালা হারাবার শোকের পাথর, চাপা দিয়ে রাখে দিগ্বিজয়ী রবি ঠাকুর আর নজরুলের কাঁপন ধরানো প্রতিবাদী সুরকে |
এ কষ্টের তরী বাইবনা রক্তের স্রোতে আর | এ দুঃখের যাতনা সইবো না বুকের পাজরে আর | আর একবার, আর একবার জন্ম দে মা | জন্ম দে তোর সেই রনাঙ্গিনি কোলে আবার | আবার গর্জে উঠি সহস্র প্রতিবাদী দিনলিপিতে | রক্তগঙ্গায় ভেসে নেয়ে উঠি আর একবার | আবার ছিনিয়ে আনি, আর একটি, একুশের রক্তধোয়া, "আমার বর্ণমালা" |
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য
আধুনিক গদ্য কবিতায় এখন এমন উপমা ব্যবহার করা হয় যেগুলো আমি ব্যক্তিগতভাবে মেনে নিতে পারছি না। গতকাল একটা কবিতায় পেলাম "ফটোকপি রোদ" শুধু বৈচিত্র আনতে হবে বলে যদি আমাদের কবিতাগুলো এমন বেখাপ্পা উপামায় জর্জরিত হয়ে যায় .... জানি না কবিতার ভবিষ্যৎ কী। তোমার কবিতাটা এমন উপমা বর্জিত তাই সরল সরল একটা ভাব আছে যা কবি এবং সাধারণ পাঠকের মাথার উপর দিয়ে যাবে না। একটা দুটো দিক যেমন অর্ধেক অংশে মাকে তোমার বলে সম্বোধন করা আর বাকি অর্ধেকে তোর বলা ভাল লাগেনি, মা গো শব্দটার রিপিটেসন ও কয়েক জায়গায় যায় না আর রনাঙ্গিনি শব্দটা বোধ হয় রঙ্গিনি হবে। কবিতা সব মিলিয়ে ভাল লেগেছে খুব ভাল। প্রোফাইলে সুন্দর একটা ক্লোজআপ ছবি দিয়ে দিও............................ ☼
সুর্য ভাই, আপনার কথাগুলো ভালো লাগলো | একটা বিষয় না বললেই নয়, আপনি খেয়াল করেছেন কিনা জানিনা, কবিতাটা ধীরে ধীরে একজন দেশপ্রেমিকের উত্তেজনা প্রকাশ করেছে | সেই উত্তেজনার প্রেক্ষিতে একটা পযায়ে দেশ মাতৃকা তুমি থেকে তুই হয়ে যায় | তার রনাঙ্গিনি রূপের কথায় বলা হয়েছে, কারণ মা কে দেখতে চাওয়া হয়েছে যোদ্ধা রূপে | আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রনাঙ্গিনি শব্দটি বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ | আমি চেষ্টা করেছি ভেতরের পাগলপারা কষ্ট টাকে প্রকাশ করতে |
যাই হোক, আপনার মন্তব্য থেকে শিক্ষনীয় বিষয়গুলো গেথে নিলাম মনে |
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।